শোয়েব সর্বনাম  : রোহিঙ্গারা এই দফায় বাংলাদেশে আসার পর ঢাকা থেকে আমাদের বেশকিছু বন্ধুবান্ধব কক্সবাজার গেছেগা। ওরা এনজিওগুলাতে লাখ লাখ টাকা বেতন পায় বলে ওইখানে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে। বাট সারাক্ষণ ঢাকার বন্ধুবান্ধবদের মিস করতে থাকে ওরা। তাদের সঙ্গ দিতে আমি মোটামুটি বছরে দুয়েকবার কক্সবাজার গিয়ে থাকি। রিফাত নামের এক তাড়ছিড়া আর্টিস্ট ফ্ল্যাট বাসার পাশাপাশি আরেকটা বাসার ছাদ ভাড়া নিয়ে ফেলছে। সেইখানে সে একটা আর্ট গ্যালারি বানাইছে। ঢাকা থেকে বড় বড় আর্টিস্টরা ওইখানে গিয়ে এক্সিবিশন করে বেড়ায়। আবার গ্রীন লাইনে চড়ে রিফাতের উদ্দেশে রওনা দিছি। ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়েতে এত ট্রাফিক আগে দেখি নাই। স্পিড চল্লিশের উপ্রে উঠে না। এর মধ্যে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের কাছাকাছি এসে সামনের একটা ট্রাকের পিছের ছিটকিনির লগে আমাদের ড্রাইভার তার বাসটা হালকা লাগায়ে দিছে। সামনের গ্লাস পুরাটা চুরমার। 

ঘণ্টাদুয়েক পর কোম্পানি প্রচারের স্বার্থে নতুন বাস পাঠাবে। ততোক্ষণ নেমে রাস্তায় দাঁড়ায়ে আছি। কিছু নারী ক্ষেপে গিয়ে বিশাল হাউকাউ লাগায়ে দিছে। সকাল সকাল হোটেলে তাদের কম্পলিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট রেডি অবস্থায় আছে। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারি অন্যান্য গ্রীন লাইনের বাসগুলা তারা থামানোর চেষ্টা করতেছে। বাট লাভ হচ্ছে না। বাস থামলেও সীট পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর নতুন বাস আসছে। রাস্তার ট্রাফিকও কমছে। তবু আমরা সময়তো চট্টগ্রাম পৌছাইতে পারিনি। তবে এই বাসচালক বেশ উড়াধুরা। সুন্দরীদের রিকোয়েস্টের কারণে কিনা জানি না, সে প্রায় রকেটের গতিতে উড়ায়ে নিয়ে গেছে! ওদের ব্রেকফাস্ট যেন সে ধরায়েই ছাড়বে! 

এইবার আমি আবিষ্কার করলাম, পুরা রাস্তায় কোনো গাড়ি হর্ন দিতেছে না। আগের ড্রাইভার গ্লাস ভেঙে ফেললেও হর্ন দেয়নি। এই নতুন গাড়ির ড্রাইভারও সুযোগ পেলেই বাউলি কাটতেছে। আচমকা ব্রেক দিয়ে চমকায়ে দিচ্ছে সকলেরে। বাট ভুলেও হর্ন দিতেছে না। বাসমালিকেরা গাড়ি থেকে সব হর্ন খুলে ফেলে দিছে নাকি! লেখক: কথাসাহিত্যিক